যেসব কারনে কুমিল্লা নামেই বিভাগ হওয়া জরুরী দেখুন একনজর

যেসব কারনে কুমিল্লা নামেই বিভাগ হওয়া জরুরী

● ময়নামতি’ নামে কুমিল্লা বিভাগের নামকরণ হবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই এই ঘোষণায় ক্ষোভ এবং দুঃখ প্রকাশ করে কুমিল্লার সব শ্রেণি পেশার মানুষ। শত বছরের ঐতিহ্যবাসী শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষি ও ক্রীড়ার পীঠস্থান কুমিল্লা বিভাগ হলে তা হবে ‘কুমিল্লা’ নামেই এমনই প্রত্যাশা কুমিল্লাবাসীর। আসুন দেখে নিন কেন কুমিল্লা নামেই বিভাগ হওয়া জরুরী।

কুমিল্লার ইতিহাস:
১. ব্রিটিশ গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলায় যখন জেলা ব্যবস্থা চালু করে তখন ১৮ জেলার একটি ছিল কুমিল্লা।
২. হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। যার স্মৃতি চিহ্ন এখনো কোটবাড়ি ও ময়নামতি এলাকায় রয়ে গেছে।
৩. বিশাল আয়তনের কুমিল্লা থেকে ১৭৮১ সালে বৃহত্তর নোয়াখালী এবং ১৯৮৪ সালে চাঁদপুর ও ব্রাক্ষনবাড়িয়া জেলা কে পৃথক করা হয়।

ঐতিহাসিক ঘটনা:
১. ১৭৬৪ সালে ত্রিপুরার রাজার বিরুদ্ধে শমসের গাজীর নেতৃত্বে পরিচালিত কৃষক আন্দোলন এ অঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। যা পরবর্তীতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রেরনা যুগিয়েছিল।
২. সাম্প্রদায়িক দাংগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯২১ সালে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মহাত্না গান্ধী কুমিল্লা জেলায় বিচরন করেন।
৩. ১৯৩১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী সুনীতি চৌধুরী ও শান্তি ঘোষ গুলি করে ম্যাজিস্ট্রেট মিস্টার স্টিভেন্সকে হত্যা করে। স্বাধীনতা আন্দোলনে কোন নারীর অংশগ্রহণ সেবারই প্রথম ঘটে।
৪. ভাষা আন্দোলন , স্বাধীনতা যুদ্ধ সহ অনেক আন্দোলন সংগ্রামে অবদানের জন্য এই জেলা ইতিহাসে ঠাই করে নিয়েছে।]

যোগাযোগ ব্যবস্থা:
১. উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার জন্য কুমিল্লাকে প্রাচ্যের হংকং এর সাথে তুলনা করা হয়। এ জেলাটি দেশের তিন বৃহত্তম জেলা ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটের মধ্যবর্তী ও নিকটবর্তী হওয়ায় এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।

জাতীয় অর্থনীতিতে কুমিল্লার অবদান:
১. প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ জেলার জ্বালানি গ্যাসের উপর ভর করেই ঢাকা ও চট্রগ্রাম অঞ্চলে ভারী শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এ জেলার ৬ টি গ্যাস ক্ষেত্রের মধ্যে তিতাস গ্যাস ক্ষেত্র থেকে ঢাকা অঞ্চলে এবং বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে চট্রগ্রামে গ্যাস সরবরাহ করে দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে।
২. যে সড়কটি একদিন বন্ধ থাকলে দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে যায় সেই লাইফ লাইন নামে খ্যাত ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিংহভাগ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে।
৩. তাছাড়া কুমিল্লা জেলার ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশ ঘেষে ঘড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্পকারখানা রয়েছে কুমিল্লা ইপিজেড ও কৃষিবান্ধব অর্থনীতি।
৪. কুমিল্লা জেলা থেকে আক্তার হামিদ খানের হাত ধরেই এদেশে সমবায় সমিতি, ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম ও ডিপ টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করে শুষ্ক মৌসুমে ইরি চাষের প্রচলন হয়েছিল যা পরবর্তীতে অভাব অনটন লাঘবে দেশের রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৫. বিদেশে সবচেয়ে বেশি শ্রমশক্তি রপ্তানি হয় কুমিল্লা জেলা থেকে এবং দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠায় কুমিল্লা জেলার মানুষ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোনার ময়না ঘরে থুইয়া বাইরে তালা লাগাইছে রসিক আমার মন বান্ধিয়া পিন্জর বানাইছে

মানুষ কখনো ইচ্ছে করে বদলায় না কিছু মানুষের অবহেলা, কিছু স্মৃতি

ঘাসফুলেদের সাথে আমি একাই কথা বলি ঘাসফুল গুলো সব ছন্নছাড়া।