পরিবর্তন আসছে ফেসবুকে

বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের
বর্তমান প্ল্যাটফর্মে বেশ কিছু
পরিবর্তন আসছে। এর ফলে ফেসবুক
ব্যবহারকারীদের ব্যক্তি ও
ব্যবসাকেন্দ্রিক যোগাযোগ
আরো সহজ হবে। ফেসবুকে আসন্ন
কয়েকটি পরিবর্তনের তালিকা
প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা
সিএনএন। লিখেছেন আহমেদ
ইফতেখার
ফেসবুকের আয়োজনে সম্প্রতি
যুক্তরাষ্ট্রের স্যান
ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিত
হয়েছে ‘এফ৮ ডেভেলপার্স
কনফারেন্স’। এবারের আয়োজনে
ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক
জুকারবার্গ বেশ কিছু নতুন সেবা
চালু করার ঘোষণা দিয়েছে।
বিশ্বায়নের এ যুগে কোনো
সেবাই এককেন্দ্রিক থাকছে না।
ফেসবুকও এখন নিজস্ব সেবার
প্রসার বাড়াতে কাজ করছে।
সামাজিক যোগাযোগ খাতের
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি এখন
ইন্টারনেটের পুরো
ইকোসিস্টেমে আধিপত্য
বিস্তারের চেষ্টা করছে।
অচিরেই ফেসবুক ৩৬০ ডিগ্রি
ক্যামেরা প্রযুক্তিতে ধারণ করা
ভিডিও সাপোর্ট করবে।
স্ক্রিনে ক্লিক ও ড্র্যাগ করে
ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন
দৃষ্টিকোণ থেকে ওই
ভিডিওগুলো দেখতে পারবেন।
ফেসবুকের মেসেঞ্জার অ্যাপ ই-
কমার্স সাইটের অংশভুক্ত হচ্ছে।
ফলে ভবিষ্যতে ব্যবহারকারীরা
অনলাইনে কিছু কেনার পর
চাইলে সেই সাইটের
অ্যাকাউন্টের সাথে নিজের
ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি সংযুক্ত
করতে পারবেন। এতে ই-কমার্স
সাইটগুলো ব্যবহারকারী
অনলাইনে কী কিনছেন সে-
সংক্রান্ত নোটিফিকেশন
সরাসরি তার মেসেঞ্জার
অ্যাপে পাঠাতে পারবে।
যারা অনলাইন কেনাকাটায়
একের অধিক ই-মেইল পেতে পছন্দ
করেন না, তাদের জন্য এ সেবা
বেশ কাজে দেবে।
এখন ব্যবহারকারীরা চাইলেই
মেসেঞ্জার সচল রেখে
অ্যানিমেটেড জিফ-ক্রিয়েটর
‘জিফি’র মতো থার্ড পার্টি
অ্যাপ চালাতে পারবেন ও
সেগুলোর কনটেন্ট সরাসরি
মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বন্ধুকে
পাঠাতে পারবেন। আগে এ কাজ
করতে হলে প্রথমে মেসেঞ্জার
বন্ধ করে, থার্ড পার্টি অ্যাপ
ওপেন করতে হতো এবং
ব্যবহারকারী যা পাঠাতে
চাচ্ছেন সেটি কপি করে ফের
মেসেঞ্জারে এসে তা
পাঠাতে হতো।
আগে ফেসবুকে ভিডিও আপলোড
করার পর ব্যবহারকারী সেটি
লিংক করা ছাড়া শেয়ার করতে
পারতেন না। ইউটিউবের বদলে
ব্যবহারকারীরা যাতে
নিজেদের ভিডিও ফেসবুকে
আপলোড করেন সে লক্ষ্যেই
ভিডিও এমবেড করার ফিচার
যোগ করা হবে।
ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানের
সাথে সরাসরি টেক্কা দিতেই
ভিডিও সেবায় পরিবর্তন আনছে
মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি।
ফেসবুকের জানানো তথ্য মতে,
গ্রাহকেরা চাইলে তাদের
আপলোড করা ভিডিও পুরো
ইন্টারনেট ব্যবস্থায় শেয়ার
করতে পারবেন; অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট
গ্রাহকের ভিডিও সব ফেসবুক
গ্রাহক দেখতে পারবেন। কিন্তু
গ্রাহক চাইলে তার ভিডিওটি
শুধু বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করতে
পারেন। ফেসবুকের নতুন সেবাটি
বিভিন্ন ব্র্যান্ড, সাংবাদিক ও
প্রকাশকদের জন্য ইতিবাচক হবে
বলেই মনে করা হচ্ছে।
অনলাইনের কোনো আর্টিক্যাল
বা পোস্টে কমেন্ট করলে তা
স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুকে
দেখা যাবে। অনলাইন
কনটেন্টের সাথে মিডিয়া
প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পৃক্ততা
বাড়ানোর লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপটি
নেয়া হয়েছে। বর্তমানে
ফেসবুকের বাজফিড,
এলিটডেইলি, দ্য হাফিংটন
পোস্ট ও ফক্স স্পোর্টস এই আপডেট
পরীক্ষা করে দেখছে।
ফেসবুক তাদের ডেভেলপারদের
জন্য অভিনব প্রোগ্রাম তৈরির
দরজা খুলে দিয়েছে। এর মাধ্যমে
বিভিন্ন ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করা
সম্ভব হবে। এ সেবার মাধ্যমে
‘ইন্টারনেট অফ থিংস’ বা
আইওটির জগতে প্রবেশ করতে
চাইছে ফেইসবুক।
এ সেবায় ডেভেলপাররা ফ্রি
ড্যাশবোর্ডে নিজেদের অ্যাপ
সম্পর্কিত বিশ্লেষণ পাবেন। এতে
ডেভেলপাররা জানতে পারবেন
কারা তাদের অ্যাপ ব্যবহার
করছেন এবং ঠিক কোন
ডিভাইসগুলোতে তাদের
অ্যাপটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
ফেসবুকের মাধ্যমে জীবনসঙ্গী
বা সঙ্গিনী বেছে নিতে
‘লাভবুক’ নামের একটি অ্যাপ
ফেসবুকে আসছে। ২৩ বছর বয়সী এক
প্রোগ্রামার সিজে জেমস এ
অ্যাপটি তৈরি করেছেন তা এরই
মধ্যে সফলতা পাচ্ছে। লাভবুকে
ব্যবহারকারীরা প্রয়োজনীয় তথ্য
দিয়ে সদস্য হতে পারবেন।
কার্যকর ডেটিং হতে পারে বয়স,
পছন্দ, স্থান ইত্যাদির ভিত্তিতে।
পেপল-এর মাধ্যমে অর্থ প্রদানের
মাধ্যমে লাভবুকে নিজের
প্রোফাইল তৈরি করতে
পারবেন। ফেসবুক এ অ্যাপের জন্য
ক্যাম্পেইন করছে। অল্প কিছু
দিনেই ১০ হাজার ছাড়িয়ে
গেছে ব্যবহারকারীর সংখ্যা।
ফেসবুকের মাধ্যমে এটি এখন
লাখো কোটি মানুষের কাছে
পৌঁছে যাবে। এ অ্যাপটির
মাধ্যমে সবাই গতানুগতিক
ডেটিং অ্যাপের বাইরে কিছু
পাবে বলে আশা করছেন
বিশেষজ্ঞরা। লাভবুক তিনটি
প্যাকেজ অফার করছে। এর সাথে
জড়িত রয়েছে ফেসবুক। প্রথম
ডেটিংয়ে সফলতার পথে
এগোতে থাকবেন যারা তারা
পাঁচটি ‘লিড’ দেয়া হবে। এগুলো
ফেসবুকের লাইক বা মেসেজ
থেকেও পাওয়া যাবে। আবার
ডেটিংয়ের জন্য বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ টিপস পাওয়া যাবে
এতে। জেমস আশা করছেন, প্রতি
মাসে এ অ্যাপটি দুই হাজার
ব্যবহারকারী পাবে। আপাতত যে
অর্থ পাওয়া যাবে তা ব্যয় করা
হবে এর ক্যাম্পেইনে। চলতি
ক্যাম্পেইনগুলো বেশ সফলতা
পাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা
অ্যাপটিকে নিজের পেজ
থেকে প্রমোট করলে তা বন্ধু
তালিকায় চলে যাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের
বিশেষজ্ঞদের মতে,
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে
শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব সব
সেবার জোরালো ইকোসিস্টেম
তৈরি করছে। ইকোসিস্টেম
বলতে বোঝায় গ্রাহককে একই
প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের
সেবা দেয়া। ফলে গ্রাহক
প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রতিষ্ঠানের
সেবা গ্রহণের বিষয়ে ভাবার
সুযোগ পান না বা প্রয়োজন অনুভব
করেন না। ফেসবুকও সামাজিক
যোগাযোগ, ইনস্ট্যান্ট
মেসেজিং, ফটো ও ভিডিও
শেয়ারিং, অর্থ হস্তান্তরসহ
অসংখ্য সেবার ইকোসিস্টেম
তৈরি করছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী

সাদা রঙের স্বপ্ন গুলো দিল নাকো ছুটি তাইতো আমি বসে একা

Why I Hate My Life? Steps reasonable.| Properly I hate my life Disgusting